
Blog
কিভাবে তৈরি করবেন সুস্বাদু বাটার সিজনড রাইস


Share This with Others!
গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতের ওপর একটু মাখন ছড়িয়ে দিলে যে অসাধারণ সুবাস ছড়িয়ে পড়ে, সেটাই হলো বাটার সিজনড রাইসের আসল আকর্ষণ! সহজ কিছু উপকরণ দিয়েই তৈরি করা যায় এই সুস্বাদু খাবার, যা ছোট-বড় সবাই পছন্দ করে।
বাটার সিজনড রাইস এত জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হলো এর রিচ ও ক্রিমি স্বাদ, সুগন্ধি মাখনের মোহনীয় সুবাস, আর সহজ রান্নার প্রক্রিয়া। এটি শুধু একটি সাধারণ সাইড ডিশ নয়, বরং মাংস, ভাজি বা এমনকি স্রেফ একটা ডিমভাজির সঙ্গেও একদম পারফেক্ট কম্বিনেশন তৈরি করে।
আরেকটি চমৎকার ব্যাপার হলো, শিশুরা সাধারণত সাদাভাত বা ঝাল-ঝাল খাবার এড়িয়ে চলে, কিন্তু বাটার সিজনড রাইস তারা দারুণ উপভোগ করে! তাই মা-বাবারাও চিন্তা না করেই বাচ্চাদের জন্য এই সহজ কিন্তু সুস্বাদু খাবারটি তৈরি করতে পারেন। একইসঙ্গে, বড়দের জন্যও এটি লাঞ্চ বা ডিনারের একদম পারফেক্ট একটি পদ!
এই ব্লগে আমরা জানবো বাটার সিজনড রাইস তৈরির সহজ রেসিপি, কিছু ভিন্ন স্বাদের টুইস্ট, আর কীভাবে এটি আরও সুস্বাদু করা যায়!
বাটার সিজনড রাইসের বিশেষত্ব
বাটার সিজনড রাইসের জনপ্রিয়তার মূল কারণ হলো এর সুগন্ধি মাখন, মোলায়েম টেক্সচার এবং রিচ ফ্লেভার। সাধারণ ভাতের তুলনায় এটি অনেক বেশি স্বাদযুক্ত, আর একবার খেলে বারবার খেতে ইচ্ছে করে! চলুন, দেখে নিই কেন এটি এত বিশেষ—
মাখনের অসাধারণ সুগন্ধ ও ক্রিমি স্বাদ
বাটারের গভীর সুবাস ও ক্রিমি টেক্সচার বাটার সিজনড রাইসকে এক অনন্য মাত্রায় নিয়ে যায়। যখন গরম চালের মধ্যে বাটার মেশানো হয়, তখন একদম রেস্টুরেন্ট-স্টাইলে সুগন্ধি ও রিচ ফ্লেভার তৈরি হয়। বিশেষ করে আনসলটেড বাটার বা ঘরে তৈরি বাটার ব্যবহার করলে স্বাদ আরও বেড়ে যায়!
সাধারণ ভাতের তুলনায় বেশি মজাদার ও রিচ ফ্লেভার
সাধারণ সাদা ভাতের স্বাদ নিরপেক্ষ হলেও, বাটার সিজনড রাইসের প্রতিটি দানায় থাকে মাখনের দারুণ স্বাদ। শুধু বাটারই নয়, এতে হালকা লবণ, গোলমরিচ, রসুন বা অন্যান্য হার্বস যোগ করলে আরও বেশি ফ্লেভারফুল হয়ে ওঠে। যারা প্লেইন ভাত পছন্দ করেন না, তাদের জন্য এটি পারফেক্ট বিকল্প!
বিভিন্ন সাইড ডিশের সঙ্গে মানিয়ে যায়
বাটার সিজনড রাইসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো—এটি প্রায় সব ধরনের খাবারের সঙ্গেই ভালো মানিয়ে যায়! আপনি চাইলে এটি—
- গ্রিলড বা ফ্রাইড চিকেন
- সবজি বা স্টার-ফ্রাইড আইটেম
- চিকেন বা বিফ স্ট্যু
- একটি সাধারণ ডিমভাজি
- এমনকি শুধু সালাদ বা স্যুপের সঙ্গেও
এই কারণে বাটার সিজনড রাইস শুধু স্বাদেই অনন্য নয়, বরং একটি মাল্টিপারপাস খাবার যা সহজেই বিভিন্ন খাবারের সাথে পরিবেশন করা যায়!
পারফেক্ট বাটার সিজনড রাইস তৈরির উপকরণ ও কৌশল
বাটার সিজনড রাইস দেখতে যেমন সুন্দর, খেতে তেমনি মাখনের গন্ধে ভরপুর ও রিচ ফ্লেভারের হয়ে থাকে। তবে পারফেক্ট বাটার সিজনড রাইস বানানোর জন্য কিছু ছোট ছোট কৌশল জানা জরুরি। সঠিক উপকরণ ও রান্নার পদ্ধতি মেনে চললেই এটি হবে একদম রেস্টুরেন্ট-স্টাইল!
মূল উপকরণ
বাটার সিজনড রাইস তৈরি করতে বেশি কিছু উপকরণের দরকার হয় না, তবে সঠিক উপকরণ ব্যবহার করলে এর স্বাদ অনেকগুণ বেড়ে যায়!
- সুগন্ধি চাল বা সাধারণ চাল – বাসমতি, চিনিগুঁড়া বা আতপ চাল হলে সুবাস আরও ভালো হয়।
- বাটার (নোনতা বা আনসলটেড) – আনসলটেড বাটার ব্যবহার করলে লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
- রসুন ও গোলমরিচ – মৃদু ঝাঁজ ও সুগন্ধ বাড়ানোর জন্য পারফেক্ট কম্বিনেশন।
- অন্যান্য মশলা (ঐচ্ছিক) – একটু পার্সলে, ধনেপাতা বা ওরিগানো দিলে রেস্টুরেন্ট-স্টাইল স্বাদ পাওয়া যায়।
- লেমন জেস্ট (ঐচ্ছিক) – একটু লেবুর খোসা ঘষে দিলে একেবারে ভিন্ন ও রিফ্রেশিং ফ্লেভার পাওয়া যায়!
রান্নার সঠিক পদ্ধতি
চাল সঠিকভাবে ধোয়া ও সিদ্ধ করা
- চাল ২-৩ বার ধুয়ে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে রান্নার সময় ভালোভাবে ফোলা ও ঝরঝরে হয়।
- চাল সিদ্ধ করার সময় পানি ও চালের পরিমাণ ঠিক রাখা জরুরি। সাধারণত ১ কাপ চালের জন্য ২ কাপ পানি ব্যবহার করলে রাইস একদম পারফেক্ট হয়।
বাটার ও মশলার সঠিক পরিমাণে ব্যবহার
- বেশি বাটার দিলে রাইস খুব বেশি তেলতেলে হয়ে যেতে পারে, তাই ১ কাপ চালের জন্য ১ টেবিল চামচ বাটার যথেষ্ট।
- গোলমরিচ, রসুন বা অন্যান্য হার্বস দিতে চাইলে খুব সামান্য পরিমাণে দিন, যাতে স্বাদ ভারী না হয়ে যায়।
কড়াইয়ে পারফেক্ট রান্নার উপায়
- একটি কড়াইতে বাটার গরম করুন, রসুন দিয়ে হালকা ভাজুন।
- ধুয়ে নেওয়া চাল দিয়ে ১-২ মিনিট নাড়াচাড়া করুন, যাতে বাটারের স্বাদ ভালোভাবে মিশে যায়।
- পরিমাণমতো পানি ও লবণ দিয়ে ঢেকে দিন, মাঝারি আঁচে রান্না করুন যতক্ষণ না পানি শুকিয়ে যায়।
- শেষে গোলমরিচ বা ধনেপাতা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন!
রাইস কুকারে পারফেক্ট রান্নার উপায়
- রাইস কুকারে চাল, পানি, লবণ ও বাটার একসঙ্গে দিয়ে দিন।
- রান্না হয়ে গেলে রসুন কুচি ও গোলমরিচ ছড়িয়ে মিশিয়ে নিন, যাতে ফ্লেভার আরও ভালো হয়।
- ১০ মিনিট ঢেকে রেখে দিন, তারপর পরিবেশন করুন!
বাটার সিজনড রাইসের ভিন্নধর্মী কিছু স্বাদ
বাটার সিজনড রাইসের সাধারণ স্বাদ তো চমৎকার, তবে আপনি যদি একটু ভিন্ন স্বাদ চান, তাহলে এতে কিছু অতিরিক্ত উপকরণ যোগ করে নতুন নতুন স্বাদ উপভোগ করতে পারেন! রান্নার সামান্য পরিবর্তনেই গারলিক, চিজি, হার্বড বা স্পাইসি বাটার রাইস তৈরি করা সম্ভব, যা একেবারে রেস্টুরেন্ট-স্টাইল স্বাদ দেবে। চলুন, দেখে নেওয়া যাক বাটার সিজনড রাইসের চারটি ভিন্নধর্মী স্বাদ ও এগুলো তৈরির সহজ উপায়!
গারলিক বাটার রাইস
রসুন ও বাটারের অসাধারণ ফ্লেভারের সংমিশ্রণে এই রাইস একেবারে পারফেক্ট! যারা একটু মৃদু ঝাঁজ ও গভীর স্বাদ পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি দারুণ অপশন।
উপকরণ
- বাটার – ২ টেবিল চামচ
- রসুন কুচি – ১ টেবিল চামচ
- চিনিগুঁড়া চালের ভাত – ২ কাপ
- লবণ ও গোলমরিচ – স্বাদ অনুযায়ী
কীভাবে তৈরি করবেন?
- কড়াইতে বাটার গরম করে রসুন দিয়ে হালকা বাদামি করে ভাজুন।
- রান্না করা ভাত দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
- লবণ ও গোলমরিচ দিয়ে ২ মিনিট নাড়াচাড়া করুন, হয়ে গেল মজাদার গারলিক বাটার রাইস!
চিজি বাটার রাইস
যারা ক্রিমি ও রিচ স্বাদের রাইস পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি দুর্দান্ত! মেল্টেড চিজের সঙ্গে বাটার ও ভাতের মিশ্রণ একেবারে অসাধারণ স্বাদ দেয়।
উপকরণ
- বাটার – ২ টেবিল চামচ
- রান্না করা ভাত – ২ কাপ
- চিজ (মোজারেলা বা চেডার) – ১/২ কাপ
- লবণ ও গোলমরিচ – স্বাদ অনুযায়ী
কীভাবে তৈরি করবেন?
- কড়াইতে বাটার গরম করুন এবং রান্না করা ভাত দিন।
- চিজ গুঁড়া করে বা কুচিয়ে ছড়িয়ে দিন এবং নেড়ে গরম করুন, যাতে চিজ পুরোপুরি গলে যায়।
- গোলমরিচ ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন!
হার্বড বাটার রাইস
যারা একটু লাইট ও ফ্রেশ ফ্লেভার পছন্দ করেন, তাদের জন্য পারফেক্ট! ওরিগানো, পার্সলে বা ধনেপাতা যোগ করলে এটি আরও বেশি অ্যারোমাটিক হয়ে ওঠে।
উপকরণ
- বাটার – ২ টেবিল চামচ
- রান্না করা ভাত – ২ কাপ
- পার্সলে বা ধনেপাতা কুচি – ১ টেবিল চামচ
- ওরিগানো – ১ চা চামচ
- লবণ ও গোলমরিচ – স্বাদ অনুযায়ী
কীভাবে তৈরি করবেন?
- কড়াইতে বাটার গরম করুন এবং রান্না করা ভাত দিয়ে নেড়ে নিন।
- পার্সলে বা ধনেপাতা কুচি এবং ওরিগানো দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে দিন।
- ২ মিনিট নাড়াচাড়া করে গরম গরম পরিবেশন করুন!
স্পাইসি বাটার রাইস
ঝাল খাবার যারা ভালোবাসেন, তারা অবশ্যই স্পাইসি বাটার রাইস ট্রাই করতে পারেন! একটু শুকনো মরিচ ও গরম মশলা যোগ করলেই এই রাইস পেয়ে যাবে দুর্দান্ত স্বাদ।
উপকরণ
- বাটার – ২ টেবিল চামচ
- রান্না করা ভাত – ২ কাপ
- শুকনো মরিচ – ২টি (ভাজা ও গুড়া করা)
- কাঁচা মরিচ – ১টি (কুচি করা)
- গোলমরিচ ও লবণ – স্বাদ অনুযায়ী
কীভাবে তৈরি করবেন?
- কড়াইতে বাটার গরম করে শুকনো মরিচ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন।
- রান্না করা ভাত দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
- গোলমরিচ ও লবণ দিয়ে ২ মিনিট নাড়াচাড়া করে গরম গরম পরিবেশন করুন!
বাটার সিজনড রাইসের সঙ্গে কী খাওয়া যায়?
বাটার সিজনড রাইসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি প্রায় সব ধরনের সাইড ডিশের সঙ্গেই মানিয়ে যায়! এর মাখনের ক্রিমি স্বাদ ও মৃদু মশলাদার ফ্লেভার যেকোনো মাংস, সবজি বা ডিমভাজির সঙ্গে দারুণ কম্বিনেশন তৈরি করে। চলুন, দেখে নেওয়া যাক কোন কোন খাবারের সঙ্গে এটি সবচেয়ে ভালো মানিয়ে যায়!
গ্রিলড চিকেন বা ফ্রাইড চিকেন
বাটার সিজনড রাইস + গ্রিলড চিকেন = পারফেক্ট কম্বো! চিকেনের হালকা স্মোকি ফ্লেভার আর মাখন-মশলাদার রাইসের সংমিশ্রণ দারুণ লাগে। একটু লেমন ওয়েজ বা সালাদ যোগ করলে স্বাদ আরও বেড়ে যায়!
টিপস
- হালকা গারলিক বাটার রাইসের সঙ্গে গ্রিলড চিকেন চমৎকার ফিউশন তৈরি করে।
- মচমচে ফ্রাইড চিকেন ও চিজি বাটার রাইস একসঙ্গে খেতে দারুণ লাগে!
ভেজিটেবল স্টার-ফ্রাই
যারা হালকা ও স্বাস্থ্যকর খাবার পছন্দ করেন, তারা স্টার-ফ্রাই করা সবজির সঙ্গে বাটার রাইস খেতে পারেন। ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, গাজর, বেবি কর্ন, বীনস ইত্যাদি হালকা সসে টস করে নিলেই হয়ে যাবে দারুণ একটা সাইড ডিশ। সবজির মৃদু ক্রাঞ্চ ও বাটার রাইসের মোলায়েম স্বাদ দারুণভাবে মিলেমিশে যায়।
টিপস
- হার্বড বাটার রাইসের সঙ্গে ভেজিটেবল স্টার-ফ্রাই বেশ ভালো মানায়।
- চাইলে একটু সয়া সস বা চিলি ফ্লেক্স দিয়ে স্টার-ফ্রাই করলে স্বাদ আরও বেড়ে যাবে!
চিকেন কারি বা গ্রেভি
যদি একটু গ্রেভি টাইপের খাবার পছন্দ করেন, তাহলে বাটার সিজনড রাইসের সঙ্গে চিকেন বা বিফ কারি দারুণ মানাবে! বাটার রাইসের হালকা স্বাদ ও চিকেন কারির ঝোল মিশে গেলে একেবারে অসাধারণ ফিউশন তৈরি হয়। দারচিনি, এলাচ ও লবঙ্গের মশলাদার ফ্লেভারযুক্ত কারি হলে বাটার রাইসের স্বাদ আরও বেড়ে যায়!
টিপস
- স্পাইসি বাটার রাইসের সঙ্গে চিকেন বা বিফ কারি বেশ ভালো যায়, কারণ এটি একটু ঝাল স্বাদের হয়।
- চাইলে রাইসের উপর সামান্য ফ্রাইড পেঁয়াজ ও ধনেপাতা ছড়িয়ে দিলে পরিবেশনা আরও সুন্দর হবে!
ডিমভাজি বা ফ্রাইড এগ
সবচেয়ে সহজ, কিন্তু অবিশ্বাস্য স্বাদের কম্বো হলো বাটার সিজনড রাইস + ডিমভাজি! দ্রুত কিছু বানাতে চাইলে ডিমভাজি বা পোচড এগের সঙ্গে বাটার রাইস পারফেক্ট। চাইলে ফ্রাইড এগের উপর একটু গোলমরিচ ও লবণ ছড়িয়ে নিলে স্বাদ আরও ভালো হবে। ঝরঝরে বাটার রাইসের সঙ্গে নরম স্ক্র্যাম্বলড এগও দারুণ লাগে।
টিপস
- চাইলে ডিমভাজির সঙ্গে সয়া সস বা চিলি ফ্লেক্স যোগ করলে একটা এশিয়ান টাচ পাওয়া যাবে!
তবে যাবার আগে…
বাটার সিজনড রাইস শুধু সুস্বাদু নয়, এটি স্বাস্থ্যকরও! মাখনের ক্রিমি টেক্সচার ও হালকা মশলার সংমিশ্রণ এটিকে সহজপাচ্য এবং পুষ্টিকর করে তোলে। বিশেষ করে, যেসব শিশু সাধারণ ভাত খেতে চায় না, তারা কিন্তু এই সুগন্ধি ও মজাদার রাইস খেতে বেশ পছন্দ করে! বড়দের জন্যও এটি লাঞ্চ বা ডিনারে দারুণ একটি বিকল্প, যা সহজেই বিভিন্ন মাংস, সবজি বা ডিমভাজির সঙ্গে পরিবেশন করা যায়।
আপনি কি কখনও বাটার সিজনড রাইস বানিয়েছেন? আপনার কি কোনো বিশেষ টুইস্ট বা ফেভারিট রেসিপি আছে? কমেন্টে শেয়ার করুন, যাতে সবাই নতুন স্বাদ আবিষ্কার করতে পারে!
জনপ্রিয় কিছু রেসিপি
Popular Blog

